jhenukmedia.com
ঢাকা, বুধবার , ২১ মে ২০২৫



  1. সর্বশেষ

চলনবিল এলাকায় পৌনে ৪ লাখ মেটিক টন রসুন উৎপাদনের সম্ভাবনা, কৃষক চান ন্যায্যমূল্য

মোঃ নূরুল ইসলাম, পাবনা জেলা প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

Link Copied!

Too Many Requests from Your Network

Please complete verification to access this content.


Click to Verify

পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জের চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় চলতি মৌসুমে প্রায় পৌনে ৪ লাখ মেট্রিক টন রসুন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইতিমধ্যে রসুন উত্তোলন কাজ শুরু হয়েছে। কৃষক রসুনের বেশ ভাল ফলনও পাচ্ছেন। এ বছর চলনবিল এলাকায় উৎপাদিত মসলা ফসল রসুন সারাদেশের প্রায় অর্ধেক চাহিদা পূরণ করবে। চলতি মৌসুমে চলনবিল এলাকার রসুন সারা দেশের আমদানী নির্ভরতা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে, ভাল ফলন হলেও বর্তমান বাজার মূল্য অপেক্ষাকৃত কম থাকায় লাভ করতে পারছেন না এ এলাকার রসুন চাষীরা। তারা মসলা ফসল রসুনের ন্যায্য মূল্য কামনা করছেন।

করোনা ভীতি উপেক্ষা করে কৃষকেরা মাঠে রসুন তোলায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিনা চাষে রসুন আবাদ অধিক লাভ জনক হওয়ায় গত তিন দশক যাবত চলনবিলাঞ্চলের চাষীরা ব্যাপক পরিমান জমিতে রসুনের আবাদ হচ্ছে। রসুন চাষের বিস্তৃতির ফলে চলনবিলাঞ্চল দেশ ব্যাপী আলাদা পরিচিতিও লাভ করেছে। বর্তমান সময়ে রসুন চলনবিল এলাকার অন্যতম প্রধান ফসলে পরিণত হয়েছে। সোনার মতো রসুনের দামও ওঠা নামা করে। কোন কোন বছর অধিক লাভ হওয়ায় এ এলাকায় রসুনকে অনেকে সাদা সোনা বলে থাকেন। তবে কোন কোন বছর কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় রসুন আবাদ করে হতাশ হন কৃষক।
চলনবিলাঞ্চলের সব উপজেলাতেই রসুন চাষ হয়। রসুন আবাদ করে এ এলাকার অনেক কৃষক এখন স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। সরেজমিন চাটমোহরের, বিলচলন, ছাইকোলা, নিমাইচড়া, হান্ডিয়াল, হরিপুর, মথুরাপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠগুলোসহ চলনবিলের অন্যান্য এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মাঠে-মাঠে, নারী-পুরুষ, কিশোর কিশোরী, তরুন যুবক যুবতী বৃদ্ধ বৃদ্ধা কর্মক্ষম প্রায় সব বয়সের মানুষ রসুন তোলার কাজে ব্যস্ত। অনেক বাড়িতে বৌঝিরা পর্যন্ত রসুন বাছাইয়ের কাজ করছেন। আবাদ ভাল হলেও করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা থাকায় রসুনের হাট গুলো ভাল জমে উঠছে না। বিক্রেতারা রসুন বিক্রি করতে গিয়ে সব সময় ভয়ে থাকছেন। অনেকে শ্রমিকের পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে কম দামে রসুন বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
পুরুষ শ্রমিকের পাশাাপশি বাড়তি আয়ের জন্য নারী শ্রমিকেরাও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলনবিল এলাকার মাঠগুলোতে রসুন তুলছেন। ভোড় বেলা ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সবার জন্য খাবার তৈরী করে নিজেরা খেয়ে গৃহস্থের জমিতে রসুন তোলার জন্য বেড়িয়ে পরছেন তারা। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীও পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গৃহস্থের রসুন তুলে দিচ্ছেন। উত্তোলণ করা রসুন শুকানোর জন্য সাড়ি করে খেতেই ফেলে রাখছেন কৃষক। রসুন চুরি রোধে খেতের মধ্যে নাড়া, খড় বিচালী অথবা কাপরের অস্থায়ী ছাউনি তৈরী করে সেখানে থেকে রাতের বেলা পাহাড়া দেন মালিক। দিনের বেলায় রোদ থেকে বাঁচতে সাময়িক সময়ের জন্য শ্রমিকেরা আশ্রয় নেন সে ছাউনীগুলোতে।

চলনবিলের উত্তরাংশের রামনগর গ্রামের রসুন চাষী বকুল হোসেন বলেন, ১ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করতে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। আশা করছেন এ জমিতে তিনি ৩০ মন রসুন পাবেন যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার টাকা। একই গ্রামের রসুন চাষী ইনামুল হক জানান, বীজ, সেচ, সার, বালাই নাশক, লাগানো এবং উত্তোলন কাজে শ্রমিক বাবদ এক বিঘা জমিতে রসুন চাষে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমান চলনবিল এলাকার হাট বাজারে আকার ভেদে প্রতিমন রসুন আকার ভেদে ৮০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে কৃষক লাভ করতে পারছে না। রসুনের বাজার দর কমলে অথবা বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে যারা অন্যের জমি লীজ নিয়ে রসুনের আবাদ করেছেন তারা অনেক বেশি লোকসানের শিকার হবেন বলেও জানান তিনি। আর দাম বাড়লে কৃষক লাভ করতে পারবে। রসুনের ন্যায্য মূল্য কামনা করছেন চলনবিলাঞ্চলের কৃষকেরা।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ.মাসুম বিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে চলনবিলাঞ্চলে আনুমানিক প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কেবল চাটমোহরে ৬ হাজার ২শ ৫ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। রবি ২০১৯-২০২০ মৌসুমে চাটমোহরে ৬ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছিল। মোট রসুন উৎপাদন হয়েছিল ৫১ হাজার ১শ ১৮ মেট্রিক টন। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছিল ৮.৩৮ মেট্রিক টন। গত বছরের মতো ফলন হলেও এ বছর চলনবিল এলাকার ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় পৌনে ৪ লাখ মেট্রিক টন রসুন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল কাদের জানান, বর্তমান সময়ে সারা দেশের মধ্যে চলনবিল অঞ্চলে রসুনের আবাদ বেশি হচ্ছে। বিলের পলি মিশ্রিত মাটিতে রসুন ভাল হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া রসুন চাষের অনুকূলে থাকায় ফলনও ভাল হচ্ছে।
(ক্যাপশন ঃ চলনবিল অঞ্চলে পুরোদমে রসুন তোলার কাজ চলছে। চাটমোহরের রামনগর মাঠ থেকে ছবিটি তোলা।)

 

মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথের দাবিতে নগর ভবনে তালা, অচল রাজধানীর একাংশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা

কাশ্মীরে আবারও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, নিহত ৩

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল

বিচারকাজে বিড়ম্বনা কমানোই প্রধান লক্ষ্য: ড. আসিফ নজরুল

তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র

বেনফিকার কাছেও পাত্তা পেলো না বার্সা

টিআইবিতে চাকরির সুযোগ

নাগরপুরে লাইসেন্স বিহীন রমরমা ওষুধ ব্যবসা

জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রধানমন্ত্রীর বৃক্ষরোপণ-বেঞ্চ উৎসর্গ

নাগরপুরে বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে কৃষকের ধান

প্রেডরাগের ছেলের সাথে ছবি তুললেন মেসি