ঢাকার শহরে অঘোষিত কারফিউ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নেতাদের নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই দিনে বাংলাদেশের যে অবস্থা, ঢাকা শহরের- এটা আমাদের কারো কাছে প্রত্যাশিত নয়। সারা শহরে অঘোষিত কারফিউ চলছে। জনগণের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জনগণকে বাদ দিয়েই আজকে সরকার এই দিনটি উদযাপন করছে।

করোনায় সরকার উদাসীনতা দেখাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, করোনায় তারা বিদেশি মেহমানদের নিয়ে ব্যস্ত হয়েছে। দেশের মানুষের কি হবে, কি হবে না- সে বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ দেখছি না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে বিএনপির প্রত্যাশা কি- এই প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু, এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ১৯৭১ সালে তারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন, সে ব্যাপারেও কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়, বন্ধু দেশের সঙ্গে অমীমাংসিত যে সমস্যাগুলো রয়েছে, বিশেষ করে পানি হিস্যা- সেখানে কোনো সমাধান হয়নি। বারবার করে তিস্তা নদীর পানির কথা বলা হয়েছে। ১০ বছর আগে তারা বলেছেন সমাধান করবেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত হয়নি।

‘কিন্তু আমাদের সরকার একতরফাভাবে ফেনী নদীর পানি দিয়েছে। আজকে সীমান্তে হত্যা বন্ধ হয়নি। একটি বা দুইটি নয়, বছরে প্রায় ১শ’ থেকে ২শ’ হত্যা করা হয়েছে। তারপরও আমরা সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। কিন্তু কেউ আমাদের প্রভু হোক, এটা আমরা চাই না।’

নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কি বিএনপি সাক্ষাৎ করবে কিনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, না।

আজকে আমাদের অনেক বিস্তারিত কর্মসূচি ছিলো উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেই কর্মসূচিগুলো আমরা পালন করতে পারছি না। আমরা স্মৃতিসৌধে যেতে পারিনি। ঢাকা জেলার নেতৃবৃন্দ সেখানে প্রতীকীভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

আজকে ৫০ বছর পরে আমাদের আশা-আকাঙ্খা পূরণ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বেআইনিভাবে ও জোর করে ক্ষমতা দখল করে জনগণের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তাই এখন আর আমরা স্বাধীন বলতে পারি না। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে।

‘আজকে শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি। আজকে এই দিনে আমরা শপথ নিয়েছি, আমরা এই শৃঙ্খলমুক্ত করবো, শৃঙ্খলিত বেগম জিয়াকে মুক্ত করবো এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবো। আর ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, তাদেরকে আমরা মুক্ত করবো।’

ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ হচ্ছে, এই দিনে বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তাদের প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।