অন্যদিকে তার ভাই হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, রোজার ঈদের পরদিন গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পর থেকে হাফিজুরের আর খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবার। নিখোঁজ ও মৃত্যুর বিষয়েও তারা এতদিন কিছু জানতে পারেননি। তিনি বলেন, “কীভাবে কোথায় আমার ভাই মারা গেল, এই বিষয়ে কিছুই বলতে পারছেন না পুলিশ। শুধু বলেছেন শনিবার রাতে একটি ‘এক্সিডেন্টের’ পর তার লাশ মেডিকেলের মর্গে আনা হয়েছে।” ঈদের পরের দিন শনিবার সকালে হাফিজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সেদিন সন্ধ্যায় মা তার সঙ্গে সর্বশেষ কথা বলেছেন। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। “অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিজ এলাকার থানায় জিডি করা হয় এবং শাহবাগ থানায়ও বিষয়টি ইনফর্ম করা হয়। আমার ভাইয়ের ছবির সঙ্গে একটি লাশের সদৃশ্য পাওয়ায় আজকে শাহবাগ থানার ওসি আমাদের ফোন করে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে নিয়ে যান। সেখানে ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেছি আমরা।“
হাফিজুরের মৃত্যুর বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি মামুন অর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,” গত ১৫ মে রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে একজন লোক ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে দা নিয়ে নিজের গলায় নিজেই কাটতে থাকে আর বলতে থাকে ‘আমাকে মাফ করে দাও’, ‘আমাকে মাফ করে দাও’। “তার পরনে ছিল একটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর খালি গা। রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়াদৌড়ি করতে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ লোকজনের সহায়তার ধরে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় রিকশা থেকে লাফ দেয়।“
মর্মান্তিক এই ঘটনার বর্ণনা করে তিনি বলেন, “এরপর তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা খারাপ দেখে ওটিতেও নেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনি রাত সোয়া ১০ দিকে মারা যান।“ এ ঘটনায় তখন পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে এবং দা জব্ধ করেছে বলে তিনি জানান। তখন ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি উল্লেখ করে ওসি বলেন,”তার কাছে মোবাইল বা ব্যাগ কিছু পাওয়া যায়নি। তার জাতীয় পরিচয়পত্র শনাক্ত করতে আঙুলের ছাপও নেওয়া হলেও শনাক্ত করা যায়নি।” তিনি বলেন,”আজ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের ভাই থানায় আসলে ওই লাশের ছবিটা দেখানো হয়। লাশের সাথে হাফিজুরের সদৃশ্য পাওয়া যায়। পরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে তার ভাই ও বন্ধুরা লাশটি শনাক্ত করেছে।”
আজ রাতে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন,” ময়না তদন্ত আগেই হয়েছে। তার পরিবার বা বন্ধু মহলের কেউ অভিযোগ করলে, সেই আলোকে তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”