Please complete verification to access this content.
করোনার সংক্রমণ রোধে ভারত থেকে আসা ট্রাকের চালক ও তাঁদের সহকারীদের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও কয়েকটি স্থলবন্দরে তার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দেড়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনে দেখা যায়, ভারতের পণ্যবাহী ট্রাক স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনে এসে থামছে। এসব ট্রাকের চালক ও সহকারীরা নিচে নেমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র শুল্ক স্টেশনে দেখাচ্ছিলেন।
জানতে চাইলে হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের উপকমিশনার সাইদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্থলবন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের চালকেরা ওঠা-নামা করতে পারবেন না। এ ছাড়া তাঁরা বাংলাদেশে অবস্থানও করতে পারবেন না। বন্দরে পণ্য খালাসের সময় ভারতীয় ট্রাকচালকের জন্য আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতীয় ট্রাকচালকদের কাছ থেকে কাগজপত্র নেওয়ার জন্য আলাদা লোক রাখা হয়েছে। ট্রাকচালক ও সহকারীদের কাউকে নিচে নামতে দেওয়া হবে না।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরেও ভারত থেকে আসা ট্রাকের চালক ও তাঁদের সহকারীরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যথেচ্ছ ঘোরাঘুরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বন্দর সূত্র জানায়, ভারত থেকে আসা ট্রাকের চালক ও সহকারীরা অবাধে যত্রতত্র ঘুরছেন। খাওয়াদাওয়া করছেন স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে। ভারতীয় এসব ট্রাক থেকে আমদানি করা মালামাল নামাচ্ছেন স্থানীয় শ্রমিকেরা।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়েত বলেন, ভারতীয় চালক ও তাঁদের সহকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাঁদের খাওয়ার জন্য রেস্তোরাঁ নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে তাঁরা যেন বাইরে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা প্রয়োজন।
ভোমরা স্থলবন্দরের মেডিকেল ইনচার্জ আবদুস শহিদ বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ভোমরা স্থলবন্দরে একটি মেডিকেল টিম নিয়োজিত আছে। তবে ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও তাঁদের সহকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে ব্যবস্থাপনার ঘাটতি আছে।
ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, অচিরেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থলবন্দর এলাকায় সড়কের দুই পাশে দাঁড়ানো ভারত, ভুটান ও বাংলাদেশের কয়েক শ পণ্যবাহী ট্রাক। এক এক করে বিজিবির তল্লাশিচৌকি পার হয়ে কাস্টমসের তল্লাশিচৌকিতে এসে থামছে ভারতীয় ও ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। কাস্টমসের তল্লাশিচৌকিতে ভিনদেশি চালকেরা নিজেই নেমে জমা দিচ্ছেন কাগজপত্র। এরপর পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে প্রবেশ করছেন বন্দরের ভেতরে। সেখানে গাড়ি রেখে বন্দর কার্যালয় এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন ভারত ও ভুটান থেকে আসা চালকেরা। মিশছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, বন্দর শ্রমিক ও চালকদের সঙ্গে। কেউ কেউ আবার চা পান করতে যাচ্ছেন বন্দর এলাকার ছোট ছোট হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে। অনেকেরই মাস্ক থুতনিতে, কারও বা পকেটে।
গতকাল এভাবেই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধায় স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা ভারতীয় চালকদের মাস্ক ছাড়া বন্দরে ঢুকতে দিচ্ছি না। তাঁদের শারীরিক দূরত্ব মানার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও অনেকে কথা শুনছেন না। আমরা তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
এদিকে ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৭৫ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল জলিল বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, তা তদারকি করা হচ্ছে।