মোঃ নূরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার
পাবনার সাঁথিয়ায় মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পাগলা(ক্ষ্যাপা)কুকুরের কামড়ে প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। কুকুরের কামড়ে আহতদের মধ্যে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী রয়েছে। এ ছাড়া গরু ছাগলকেও কুকুর কামড় দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। আহতদেরকে সাঁথিয়া হাসপাতালে ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার(২৫মার্চ) সকাল ৮টা থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত সাঁথিয়া পৌরসদরের পিপুলিয়া,নওয়ানী, ফকিরপাড়া,কালাইচাড়া, পূর্বভাবানীপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৮টার দিকে একটি কুকুর এসে শিশু,বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী,গরু-ছাগলসহ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই কামড় দিয়েছে। এইভাবে ওই কুকুর বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ ও বেশকিছু গরুছাগলকে কামড়িয়ে আহত করে। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের ভীড়ে চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হয়েছে চিকিৎসকদের। এদিকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তাদের দপ্তরে কুকুর কামড়েরর কোন ভ্যাকসিন নেই। এলাকাবাসী অনেক চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত কুকুরটিকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
আহতরা হলেন, বাছিরণ (৪০), হাদিয়া (১২),মারজিয়া (২৩),রাব্বি (৭), প্রতিবন্দী সাথী (১৮), শফিক (৯), চম্পা (৪২), নিহারা (৪০),ফারহান (৩), সামিউল (৪),জ্যোতি(৩), চম্পা (৬৫), সোহান (৭), জান্নাতুল(৮), রাহেলা (৮০), জিহাদ (৮), প্রতিবন্ধী গোলাম আযম (৩৫)সহ শতাধিক মানুষ। জানা গেছে, রোগীদের একটা আইজি ভ্যাকসিন হাসপাতাল থেকে দেয়া হয়েছে। অন্যটা র্যাবিস ভিসি রোগীদের স্বজনেরা বাজার থেকে ক্রয় করে চিকিৎসা নিচ্ছে। হঠাৎ করে কুকুড়ের কামড়ে অনেক রোগী আহত হওয়ায় ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। বর্তমানে বাজারেও ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য পাবনা জেলা সদর থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে আসার চেস্টা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সাঁথিয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ রকম ঘটনা সচারাচর হয় না। বিষয়টা হঠাৎ করে হওয়ায় এজন্য আমাদের একটু বেগ পেতে হয়েছে। উপজেলা পরিষদের অনুদানের টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনে আমরা সবাইকে চিকিৎসা দিয়েছি। শুধু একজন রোগীকে আমরা ভর্তি করেছি। বাকিদেরকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পাদ কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, ‘মানুষের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গরু ছাগলকেও কুকুর কামড় দিয়ে আহত করেছে। আমরা আমাদের দপ্তর থেকে গবাদি পশুগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তবে আমাদের দপ্তরে কুকুর কামড়ের কোন ভ্যাকসিন নেই।’
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ হোসেন জানান, ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য উপজেলা পরিষদের রোগী কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে রোগীদের সেবা দিতে। কেউ যেন সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে।
গত ৩ মার্চ উপজেলার পুরানচর গ্রামের আবদুল হাই নামের এক ব্যাক্তি কুকুরের কামড়ে মারা গিয়েছে বলে জনা যায়।