আমার দেখা একজন ভালো মানুষ আমার নানা ভাই
আমি আর আমার বোন মারুফা মাত্র ১ বছরের ছোট বড়ো তাই মায়ের অনেক কষ্ট হবে ভেবেই মাত্র দেড় বছর বয়সে আমাকে আমার নানা-নানি যশোর জেলার দৌলাতদিহী গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। সেই সূত্রে আমার বেড়ে ওঠা নানা-নানির কাছেই এক সাথে খাওয়া এক সাথে ঘুমানো। নানিকে আমি নানি বলে ডাকতে পারতামনা বউ বলে ডাকতাম এই নিয়ে নানা আমার সাথে কতো শত মজা করতো।
যখন সামান্য বুঝতে শিখলাম তখন থেকে আমার পাখি ওয়ালা টাকা অর্থাৎ ২টাকার নোটের প্রতি লোভ জন্মে ছিলো নানার কারণেই । ১০ টাকা বা ২০ টাকার নোটে আমার মন ভরতোনা। আমি শুধু চিনতাম ২টাকার নোট। তাই নানা আমার জন্য পাখি ওয়ালা টাকা অর্থাৎ ২ টাকার নোট গুছিয়ে রাখতো। আমার খুশীর দাম মাত্র ২টাকা। আজ আমি চাকুরির সুবাদে প্রবাসে। লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করি তবুও আমার নানার দেওয়া ২টাকার নোটের মতো মায়া জড়ানো টাকার গন্ধ আমি লক্ষ লক্ষ টাকাতেও খুজে পাইনা। নানা খুব মিশুক ছিলেন, একদিন আমাদের গ্রামের বাড়িতে এলেন আমি আমার চাচাতো ভাই সোহাগ, ছোট কাকাসহ অনেকেই ফুটবল খেলছি হঠাৎ নানা এসে গোল পোষ্ট বানিয়ে আমাদের সাথে খেলতে শুরু করেদিলেন।
আমি বিদেশে আসার পরে নানা আমার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে গেলেই কেঁদে ফেলতেন। তাই নানার সাথে বেশি কথা বলতে পারিনি। ছোট বেলায় ঈদের দিন এলে নানা আমার কলে নিয়ে সারা পাড়া এক করে বেড়াতেন। আমার নানা ০১ জুলাই রোজ বৃহস্পতিবার আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সরাসরি বা ফোনে উনার কাছে মাফ চাওয়াটাও হয়ে ওঠেনি। নানা আমার চোখে একজন সৎ নামাজি এবং আদর্শবান ভালো মনের মানুষ ছিলেন।
সবার কাছে অনুরোধ, আমার চোখে দেখা এই ভালো মানুষটি যদি কোন ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর সাথে অন্যায় বা খারাপ আচরণ করে থাকে তাহলে অনুরোধ আপনারা তাকে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন এবং দোয়া করবেন আল্লাহ যেন, উনার জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করেন।