লেবুর চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ বেশি হওয়ায় পাবনার চাটমোহরের হাট বাজারে পানির চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে লেবু। অনেক সময় লেবুচাষীরা বাজারে লেবু বিক্রি করতে এসে পাইকারী ক্রেতা না পাওয়ায় লেবু বিক্রি করতে পারছেন না।
করোনা পরিস্থিতিতে, এখন থেকে মাস চারেক পূর্বেও বেশ ভাল দামে লেবু বিক্রি করেছেন চাষীরা। কিন্তু গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত লেবুর বাজার দর একেবারেই কমে গেছে। ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে চায়না, থাইসহ বিভিন্ন জাতের লেবু। লেবুর এমন দর পতনে চাটমোহরের লেবু চাষীরা এখন দিশেহারা।
উপজেলার দোলং গ্রামের লেবু চাষী জনি হোসেন জানান, অসময়ে প্রায় ৪০ টাকা হালি লেবু বিক্রি করেছি। লাভ জনক হওয়ায় গত দুই বছরে চাটমাহরের বিভিন্ন গ্রামের অনেক মানুষ লেবু চাষে ঝুঁকেছেন। অনেক কৃষক ইতিমধ্যে সফলতাও পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে লেবুর দাম একেবারেই কমে গেছে। বাজারে এক লিটার পানি যখন ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তখন প্রতি কেজি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১২ টাকায়। দোলং গ্রামের কলেজ শিক্ষিকা ও চাটমোহর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন তার বাড়ির পাশে একটি লেবু বাগান গড়ে তুলেছেন। তিনি জানান, অতি সম্প্রতি ৮ টাকা কেজি দরেও চায়না ও থাই লেবু বিক্রি করেছেন তিনি। প্রতি ১০০ টি দেশী পাতি লেবু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। গাছ থেকে ১০০ টি লেবু উত্তোলন বাবদ শ্রমিককে দিতে হয় ১৫ টাকা। এছাড়া পরিবহন খরচ ও আড়তদাড়ের কমিশন তো দিতেই হয়। লেবু চাষী আনিসুর রহমান জানান, গতকাল সবচেয়ে ভালো সাইজের চায়না লেবু ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। চাটমোহর পৌর সদরের লেবু ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানান, চাটমোহর থানা বাজারে প্রায়শই ১২ থেকে ১৪ টাকা দরে লেবু বিক্রি করছেন তিনি। চাটমোহর থানা বাজারের আড়তদার মকবুল হোসেন জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি লেবু সরবরাহ হওয়ায়
এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হচ্ছে। চাটমোহরে বর্তমানে চায়না, থাই, সীড লেস ও দেশী পাতি লেবু চাষ হচ্ছে। চায়না, থাই ও সীডলেস লেবুতে সারা বছরই কম বেশি ফলন পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে লেবুর পূর্ণ মৌসুম বিধায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কমেছে।