৫ আগস্ট নির্বাচন চাইলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্টকে দক্ষিণ এশিয়ার স্মরণীয় দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তিনি ৫ আগস্ট জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান : গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই দাবি জানান। সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আমরা বিগত কয়েকবার সরকারে ছিলাম, বিরোধী দলে ছিলাম এবং ৪০ থেকে ৪৫ বছর ধরে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। তাই আমরা বুঝি, কতদিনে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। সেজন্য আমরা বলছি, নির্বাচনী আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিন।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন দিতে কেন বিলম্ব হচ্ছে, সেটা জনগণকে জানাতে হবে। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর ১৫ দিন পার হয়ে গেছে; এখনো রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। আমি আশা করব, দ্রুত আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে পাহারা দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো। কেউ এটা ভাববেন না যে, এই আন্দোলন ১০ থেকে ১৫ দিনে হয়ে সফল হয়েছে। এটা ঠিক নয়, বিগত ১৬ বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান সফল হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই গণঅভ্যুত্থান জাতি গঠনের সুযোগ এনে দিয়েছে। আমরা যেন এটি হেলাফেলা করে নষ্ট না করি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

নুরুল হক নুর দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, “বিগত ৫ মাসে সরকার কোনো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। বর্তমানে যেভাবে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে, এগুলো বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। সংকট মোকাবিলায় নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। তাই আমি বলবো, ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিন।”

বিজেএর সভাপতি পার্থ সারথি দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল।

আলোচকরা মনে করেন, বর্তমানে দেশে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে, তা নিরসনে দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। সরকারকে অতি দ্রুত সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা জরুরি। সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং নুরুল হক নুরের মতো নেতাদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তারা দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী পদক্ষেপ নেয় এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান কী হয়।